/ খুলনায় দুদকের গণশুনানি: নাগরিক ভোগান্তি ও দুর্নীতির অভিযোগে তাৎক্ষণিক নির্দেশ

খুলনায় দুদকের গণশুনানি: নাগরিক ভোগান্তি ও দুর্নীতির অভিযোগে তাৎক্ষণিক নির্দেশ

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর উদ্যোগে খুলনা সদরে সরকারি দপ্তরসমূহে সেবাবঞ্চিত ও হয়রানির শিকার নাগরিকদের অভিযোগ শুনতে রবিবার (২৫ মে) সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এক সরাসরি গণশুনানির আয়োজন করা হয়।

গণশুনানিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুদকের কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী। তাঁর বক্তব্যে তিনি সরকারি কর্মচারীদের উদ্দেশে বলেন, “জনগণের করের টাকায় আমাদের বেতন হয়, অথচ আমরা তারাই আবার জনগণের উপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করি—এটা কাম্য নয়। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উচিত ইমানদারির সঙ্গে জনগণকে সেবা প্রদান করা। যিনি সৃষ্টিকর্তাকে ভয় করেন, তিনি কখনও জেনে-শুনে অন্যায় করতে পারেন না।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা প্রত্যেকেই নিজ নিজ অবস্থানে বিচারক। পরিবারে নিজের আয়ের চেয়ে বেশি উপহার দিলে বা বিলাসিতা করলে সন্তানের কাছে জবাবদিহি করাটা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই পরিবার থেকে সততা শুরু করতে হবে।”

তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “তোমরা হতাশ হবে না। পরিবার ও সমাজের কল্যাণে কাজ করবে এবং প্রয়োজন হলে উদ্যোক্তা হবে। শিক্ষা ও জ্ঞানকে প্রজাতন্ত্রের কল্যাণে ব্যবহার করতে হবে।”

দুদকের কমিশনার (অনুসন্ধান) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহসান ফরিদ বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, “দুর্নীতির শিকড় উপড়ে ফেলতে হলে আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।”

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন দুদকের খুলনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মোঃ আবদুল ওয়াদুদ।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিভাগীয় কমিশনার মোঃ ফিরোজ সরকার, দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মোঃ আক্তার হোসেন, পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মোঃ রেজাউল হক, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ জুলফিকার আলী হায়দার ও পুলিশ সুপার টি এম মোশাররফ হোসেন।

গণশুনানিতে খুলনার বিভিন্ন সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী, বিশিষ্ট নাগরিক ও অভিযোগকারী ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানে ভুক্তভোগীরা সরাসরি অভিযোগ উপস্থাপন করেন—যার মধ্যে ঘুষ, হয়রানি, অনিয়ম ও দীর্ঘসূত্রিতার মতো বিষয় উঠে আসে। দুদক এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে তাৎক্ষণিক তদন্তের নির্দেশনা বা প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

এই গণশুনানির মূল বার্তা ছিল “দুর্নীতির বিরুদ্ধে তারুণ্যের একতা, গড়বো আগামীর শুদ্ধতা।”

অনুষ্ঠান শেষে দুদক কর্মকর্তারা জানান, ভবিষ্যতেও এ ধরনের শুনানি অব্যাহত থাকবে এবং যে কোনো দুর্নীতির অভিযোগে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।