বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) আয়োজিত ও জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP) এর সহযোগিতায় “বাংলাদেশের দারিদ্র্য মানচিত্র ২০২২” বিষয়ক বিভাগীয় কর্মশালা বুধবার (২১ মে) সকালে খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব আলেয়া আক্তার। তিনি বলেন, “দারিদ্র্য মানচিত্র ২০২২ একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক যা সরকার ও উন্নয়ন সংস্থাগুলোকে পরিকল্পনা ও সম্পদের সুষম বণ্টনে সহায়তা করবে। জাতীয় থেকে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত বাস্তব ভিত্তিতে টার্গেটেড নীতি গ্রহণে এই মানচিত্র কার্যকর ভূমিকা রাখবে।”
সচিব আরও জানান, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ও বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় বিবিএস ২০২৫ সালের ৩০ জানুয়ারি দারিদ্র্য মানচিত্র প্রকাশ করে। এই তথ্যকে কাজে লাগিয়ে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোকে বাস্তবভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মোঃ ফিরোজ সরকার। তিনি বলেন, “যেকোনো সমস্যার সমাধানে তথ্যই প্রথম শর্ত। দারিদ্র্যের প্রকৃত চিত্র বিশ্লেষণের মাধ্যমে আমাদের নীতি-নির্ধারণে গুণগত পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে।”
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মোঃ মইনুল হক আনছারী, বিবিএস মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান এবং খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দেন খুলনা বিভাগীয় পরিসংখ্যান দপ্তরের যুগ্মপরিচালক মোঃ আখতার হোসেন। আলোচনা পর্ব সঞ্চালনা করেন পরিসংখ্যান ও তথ্য বিজ্ঞান বিভাগের যুগ্মসচিব ড. দীপঙ্কর রায়।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিবিএসের উপপরিচালক ও পোভার্টি অ্যান্ড লাইভলিহুড স্ট্যাটিসটিকস সেলের ফোকাল পয়েন্ট মোঃ মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি মানচিত্রের কাঠামো, প্রক্রিয়া ও তথ্য উৎস সম্পর্কে বিশদ ব্যাখ্যা দেন।
অতিথিরা বলেন, শুধু অর্থনৈতিক সূচক নয়, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাসস্থান, পুষ্টি ও জীবনযাত্রার মান—এই উপাদানগুলোকেও দারিদ্র্য নির্ধারণে যুক্ত করা দরকার। সংখ্যাগত দিক থেকে গুণগত বিশ্লেষণের দিকে যাওয়া গেলে তথ্য আরও নীতিনির্ধারণমূলক হবে।
উন্মুক্ত আলোচনায় এনজিও প্রতিনিধি, বিভাগীয় কর্মকর্তারা দারিদ্র্য দূরীকরণে বাস্তবভিত্তিক কর্মসূচি গ্রহণ, স্থানীয় সরকারকে যুক্ত করা, এবং দারিদ্র্য হ্রাসে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDG) বাস্তবায়নের প্রস্তাব তুলে ধরেন।
কর্মশালায় খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে সরকারি কর্মকর্তা, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও WFP প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।