/ সামরিক মর্যাদায় শেষ বিদায়: ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকিরের ফিউনারেল প্যারেড সম্পন্ন

সামরিক মর্যাদায় শেষ বিদায়: ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকিরের ফিউনারেল প্যারেড সম্পন্ন

রাজধানীর দিয়াবাড়িতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে শহীদ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলামের ফিউনারেল প্যারেড সম্পন্ন হয়েছে।আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি বীর উত্তম এ কে খন্দকারের প্যারেড গ্রাউন্ডে নামাজে জানাজা ও গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। পরে তাঁর মরদেহ রাজশাহীতে নিজ জেলা কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

এর আগে, গতকাল সোমবার (২১ জুলাই) নিয়মিত প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে উড্ডয়নকালে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি FT-7 BGI যুদ্ধবিমান যান্ত্রিক ত্রুটির সম্মুখীন হয়। বৈমানিক ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম বিমানটিকে জনবহুল এলাকা থেকে দূরে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলেও তা সম্ভব হয়নি। শেষ পর্যন্ত বিমানটি বিধ্বস্ত হয় ঢাকার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে। দুর্ঘটনার পরপরই আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে সিএমএইচসহ বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক পরে তৌকির ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল ২৭ বছর ৮ মাস ১৩ দিন।

ফিউনারেল প্যারেডে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এসময় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে সহকারী নৌবাহিনী প্রধান (পরিচালন) শহীদ বৈমানিকের কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান। মরহুমের পরিবারের সদস্য, সামরিক বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও অন্যান্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খানও এক বিবৃতিতে শোক প্রকাশ করেন এবং শহীদের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম ১৯৯৭ সালের ৯ নভেম্বর রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার সপুরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পাবনা ক্যাডেট কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি শেষ করে তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) থেকে বিএসসি (এ্যারোনটিক্স) ডিগ্রি অর্জন করেন।২০১৬ সালে তিনি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে যোগ দেন এবং ২০১৯ সালে জিডি (পি) শাখায় কমিশন লাভ করেন। পেশাগত জীবনে তিনি ১৫ ও ৩৫ নম্বর স্কোয়াড্রনে স্কোয়াড্রন পাইলট ও অ্যাডজুটেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।চাকুরিকালীন সময়ে তিনি দেশে ও বিদেশে একাধিক প্রশিক্ষণ কোর্স সফলভাবে সম্পন্ন করেন। এর মধ্যে রয়েছে- এ্যারোস্পেস মেডিসিন, এয়ার ইন্টেলিজেন্স, ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার এবং পটেনশিয়াল ফ্লাইট কমান্ডার কোর্স। ভারত থেকেও তিনি অপারেশনাল ট্রেনিং ইন এ্যারোস্পেস মেডিসিন (ফাইটার) কোর্স সম্পন্ন করেন।