ঘাটগুলো থেকে সরকারি রাজস্ব
ফাঁকি দিতে তৎপর একাধিক চক্র
এ এইচ হিমালয় : খুলনার জেলখানা ফেরিঘাট ইজারা নিয়ে দ্ব›েদ্ব জড়িয়েছে ইজারাদার ও সড়ক বিভাগ। গত ১৫ বছর নামমাত্র মূল্যে ইজারা নিয়ে ঘাট পরিচালনা করতেন আওয়ামী লীগ নেতারা। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে বদলে যায় দৃশ্যপট। উন্মুক্ত দরপত্রে ৮৪ লাখ ৪১ হাজার টাকা দর ওঠে।
কিন্তু বিপুল আয়ের এই সুযোগও বন্ধ হয়ে গেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কারসাজিতে। সড়ক বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন ঘাটটিতে জেলা পরিষদ ও বাংলাদেশ আভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডবিøউটিএ) মালিকানা রয়েছে-এমন দাবি করে আদালতে মামলা করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। মামলায় নতুন ইজারা প্রদানের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত। এতে ৮৪ লাখ টাকার রাজস্ব আদায়ের সুযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সম্প্রতি খুলনার বিভিন্ন ঘাটের ইজারা নিয়ে একই ঘটনা ঘটছে। ৫ আগস্ট পরবর্তী পুরানো সিন্ডিকেট ভেঙে যাওয়ায় সরকারের বিপুল অংকের টাকা রাজস্ব আদায়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে। কিন্তু পুরাতন দরে ঘাট ইজারা নিতে মামলা করে নতুন দরপত্রের বিষয়ে আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে আনছে একটি চক্র। এতে ঘাট থেকে সরকারের বাড়তি রাজস্ব আদায়ের সুযোগ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। নগরীর রূপসা ফেরিঘাটেও একই ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার সঙ্গে সরকারি সংস্থাগুলোর অসাধু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
সড়ক বিভাগ থেকে জানা গেছে, গত ৩০ বছর ধরে জেলখানা ফেরিঘাট ইজারা দিচ্ছে সড়ক বিভাগ। গত ১৫ বছর মেসার্স ধ্রুব এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান কম মূল্যে ঘাট ইজারা নিতো। গত তিন বছরে ঘাটের ইজারা মূল্য ছিল ৫৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। ইজারার মেয়াদ শেষ হওয়ায় গত মার্চ মাসে সড়ক বিভাগ ইজারা দরপত্র প্রকাশ করে। দরপত্রে ৮৪ লাখ ৪১ হাজার টাকা দর দেয় মেসার্স জহুরুন এন্ড সন্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু ধ্রæব এন্টারপ্রাইজের পক্ষ থেকে আদালতে মামলা করে নতুন প্রতিষ্ঠানকে ইজারা প্রদানের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা এনেছে।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ধ্রæব এন্টারপ্রাইজের মূল মালিকদের কেউই খুলনায় নেই। প্রতিষ্ঠানটির নাম ব্যবহার করে একটি গোষ্ঠী মামলা করে নতুন দরপত্র আটকে দিয়েছে। এতে ৮৪ লাখ টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সড়ক বিভাগ। একটি রাজনৈতিক দলের কিছু নেতা এর পেছনে ভ‚মিকা রাখছে।
সড়ক বিভাগ খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী তানিমুল হক পূর্বাঞ্চলে বলেন, গত ৩০ বছর সড়ক বিভাগ ঘাট পরিচালনা করছে। মালিকানার পক্ষে সব কাগজ আদালতে উত্থাপন করা হয়েছে। সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিতে একটি পক্ষ আদালতে মামলা করেছে। আমরা আইনীভাবে বিষয়টি নিষ্পত্তির দিতে এগোচ্ছি।