/ ফেরেননি কুয়েট ভিসি, শিক্ষকদেরঅবস্থান শেষে এক দফার হুঁশিয়ারী

ফেরেননি কুয়েট ভিসি, শিক্ষকদেরঅবস্থান শেষে এক দফার হুঁশিয়ারী

কাউকে দায়িত্ব না দিয়েই গত সোমবার ক্যাম্পাস ত্যাগ করা খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের(কুয়েট) অন্তর্বর্তীকালীন ভাইস চ্যান্সেলর(ভিসি) অধ্যাপক ড. হযরত আলী গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরেননি।
এদিকে, কুয়েট শিক্ষক সমিতির পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষকরা। এর আগে কয়েকজন শিক্ষক নেতা ভিসির দপ্তরে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। অবস্থান কর্মসূচি শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন, যথাক্রমে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মোঃ ফারুক হোসেন ও সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ সাহিদুল ইসলাম। তারা বলেন, বুধবার দুপুর একটার মধ্যে কুয়েটের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত না হলে সাধারণ সভা করে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষক সমিতির নেতারা বলেন, যেহেতু কুয়েটের বর্তমান প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ সেহেতু প্রয়োজন হলে এক দফার কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবে শিক্ষক সমিতি। তবে সেটি আজকের সাধারণ সভার পর সিদ্ধান্ত হবে বলেও সমিতির সভাপতি জানান।
অপরদিকে, প্রায় তিন মাস হতে চললেও কুয়েটের অচলাবস্থার অবসান না হয়ে বরং ক্রমেই জটিলতার দিকে যাচ্ছে বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ৩৭ শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়ার পর অনেকটা থমকে গেছে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। তিন দফায় শিক্ষকদের কাছে খোলা চিঠি দিয়ে ক্ষমা চাওয়ার পরও শিক্ষার্থীরে শাস্তি মওকুফের কোন সিদ্ধান্ত না হওয়ায় বরং শিক্ষক সমিতির ক্লাস বর্জন কর্মসূচিতে অটল থাকায় কুয়েট ক্রমেই অচলাবস্থার দিকে যাচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে অন্তর্বর্তীকালীন ভিসি সোমবার সকালে কাউকে না বলেই ঢাকায় চলে যান। এমনকি তিনি একজন সিনিয়র ডিনকে মোবাইলে বিষয়টি জানালেও অফিসিয়ালী কাউকে দায়িত্ব দিয়েও যাননি। সে কারনে কুয়েট এখন এক প্রকার অভিভাবকহীন।
এর আগে ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ২৫ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কুয়েটের তৎকালীন উপাচার্য(ভিসি) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাছুদ এবং উপউপাচার্য(প্রোভিসি) অধ্যাপক ড. শরীফুল ইসলামকে অব্যাহতি দেওয়া হলে পাঁচদিন অভিভাবকশূণ্য থাকে কুয়েট। পরে পয়লা মে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হযরত আলীকে কুয়েটের অন্তর্বর্তীকালীন ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি ২ মে খুলনা এসেও পূর্বঘোষিত ৪ মে থেকে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করতে পারেননি। কেননা তখন শিক্ষক লাঞ্ছিতের প্রতিবাদে শিক্ষকরা ৫ দফা দাবি নিয়ে ক্লাস বর্জন শুরু করেন। পরে শিক্ষক সমিতি ৫ মে সাধারণ সভা ডেকে সাত কর্মদিবসের আলটিমেটাম দিয়ে শিক্ষক লাঞ্ছিতের সাথে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান। যা শেষ হয় ১৫ মে। এরই মধ্যে গত ১৮ ও ১৯ ফেব্রæয়ারিসহ এ পর্যন্ত সৃষ্ট ঘটনার সাথে জড়িত বিশেষ করে শিক্ষক লাঞ্ছনার সাথে যে ৩৭জন শিক্ষার্থী জড়িত তাদেরকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গত ১২ মে তাদেরকে শোকজ করে ১৫ মে বিকেল পাঁচটার মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়। কিন্তু শিক্ষার্থীরা জবাব না দিয়ে তৃতীয় দফায় খোলা চিঠি দিয়ে শিক্ষকদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
এভাবেই শিক্ষকদের সাথে শিক্ষার্থীদের দূরত্ব থেকেই যায়। এক পর্যায়ে শিক্ষক আন্দোলনের মধ্যেই সোমবার সকালে খুলনা ত্যাগ করেন অন্তর্বর্তী ভিসি।