খুলনার দৌলতপুর থানা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি মো. মাহবুবুর রহমান মোল্লা হত্যা মামলায় দ্বিতীয় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত যুবকের নাম মো. আলাউদ্দিন (২২)। তিনি দৌলতপুর থানার পশ্চিম মহেশ্বরপাশা এলাকার বাসিন্দা, পিতা নুরুল ইসলাম। পুলিশের দাবি, মাহবুব হত্যা পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল আলাউদ্দিন ও এর আগে গ্রেপ্তার হওয়া মো. সজলের। রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে আলাউদ্দিনকে দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা ও তেলীগাতি সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এর আগে, শনিবার রাতে সজল শেখ নামের একজনকে মহেশ্বরপাশা পশ্চিমপাড়া থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে আদালতের মাধ্যমে তাঁকে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। দুজনেরই দায়িত্ব ছিল হত্যাকারীদের গোপন তথ্য সরবরাহ ও পালাতে সহায়তা করা।
দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর আতাহার আলী বলেন,সজলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা দুজন হত্যাকাÐের দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল এবং হত্যাকারীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগে ছিল। তারা জানত কখন, কোথায়, কীভাবে মাহবুবকে হত্যা করা হবে।
গত ১১ জুলাই (বৃহস্পতিবার) দুপুরে মাহবুব মোল্লাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তিনি নিজের প্রাইভেটকার পরিষ্কার করছিলেন; পাশে ছিলেন তাঁর বন্ধু জাকির। মোটরসাইকেলে আসা তিন যুবক খুব কাছ থেকে গুলি করে মাহবুবকে। গুলি তাঁর মাথা ও মুখের ডান পাশে লাগে। মাটিতে লুটিয়ে পড়ার পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে তাঁর দুই পায়ের রগ কেটে দেয় সন্ত্রাসীরা। সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, একজনের মাথায় হেলমেট থাকলেও বাকি দুইজন মুখ খোলা ছিল। তিনজনই পালিয়ে যায় মোটরসাইকেলযোগে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে চরমপন্থি নেতা হুমায়ুন কবির হুমা ও তাঁর সহযোগীদের উপস্থিতি। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, হত্যাকাÐের আগে চরমপন্থিদের সঙ্গে মাহবুব মোল্লার বিভিন্ন ইস্যুতে বিরোধ চলছিল—এর মধ্যে ছিল মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ, ভবন দখল ও পূর্বের একটি চরমপন্থি ধরিয়ে দেওয়া।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আসিফ, রায়হান ও ইমন নামের তিন যুবক হত্যাকাÐে সরাসরি জড়িত থাকতে পারেন। তারা স¤প্রতি জামিনে বেরিয়ে আসে এবং দীর্ঘদিন ফেরারি ছিল। একই এলাকায় তাদের বাড়ি হলেও তারা পরিবার ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে বাগেরহাটে অস্ত্রসহ ধরা পড়েছিল এই গোষ্ঠী।
মাহবুব মোল্লা ছিলেন বিএনপির রাজনীতির একজন সক্রিয় কর্মী। দলটি শুরু থেকেই এই হত্যাকাÐকে পরিকল্পিত রাজনৈতিক খুন দাবি করে আসছে।
ওসি মীর আতাহার আলী আরও বলেন, হত্যায় কারা কারা জড়িত তা ধীরে ধীরে স্পষ্ট হচ্ছে। আমরা যেসব তথ্য পেয়েছি, তা যাচাই-বাছাই চলছে। এ পর্যন্ত দুজনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। আরও কয়েকজনকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।