হাসান চৌধুরী, দৌলতপুর: প্রতিদিন ভোর থেকে রাত, হাজারো মানুষ খুলনা শহরের দৌলতপুর এলাকার প্রাণকেন্দ্র ট্রাফিক আইল্যান্ড থেকে বাজার বটতলা মোড় পর্যন্ত হেঁটে চলে। স্কুলগামী শিশু, অফিসপাড়ার কর্মী, বাজারের দোকানি, বৃদ্ধ মা সবাই একসাথে হাঁটেন এই গুরুত্বপূর্ণ খুলনা-যশোর রোডের পশ্চিম পাশের ফুটপাত ধরে। কিন্তু, পা ফেলার মতো জায়গা কোথায়?
এই ফুটপাতটি দৌলতপুরের সবচেয়ে পুরাতন এবং ব্যস্ততম প্রধান সড়কের অংশ। অথচ বছরের পর বছর এটি রয়ে গেছে ভয়াবহ বেহাল দশায়। উঁচু-নিচু ভাঙা পাথর, কাদামাটি, গর্তে ভরা এই ফুটপাত দেখলে মনে হয় যেন খাইবার পাসের দুর্গম পথ।
ফুটপাতের দুই পাশে ব্যাংক, বীমা অফিস, স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা, ফার্মেসি, হোটেল-রেস্তোরাঁ, মাছবাজার, লঞ্চঘাট, এবং গুরুত্বপূর্ণ আড়ৎ থাকলেও, এটির সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেই। এমনকি ফুটপাতের বেহাল দশার কারণে অনেক সময় স্কুলপড়ুয়া শিশুরা সড়কের গা ঘেঁষে হাঁটতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।
দৌলতপুর উপশহরের আঞ্জুমান রোডের প্রবেশদ্বারও একইভাবে বিপজ্জনক। এখানে ড্রেনের উপর ফুটপাত এবং প্রধান সড়ক অবৈধ দোকানপাটে দখল হয়ে আছে। ফলে পথচারী ও যানবাহন উভয়ের চলাচল বিপর্যস্ত। রহিমা বেগম, এক স্থানীয় বাসিন্দা বললেন, ড্রেনের উপর দোকান বসিয়ে পুরো রাস্তা আটকে দিয়েছে। ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যেতে ভয় পায়।
মীনাক্ষী সিনেমা হল, মর্তুজা মেনশন, মর্তুজা হাউস, মর্তুজা মাদ্রাসা, স্কুল, মক্তব, মসজিদের আশেপাশের সড়কগুলোতেও প্রায় প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটছে। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত এক পথচারীর ভাই বললেন, আমার ভাই গত সপ্তাহে পা ভেঙে হাসপাতালে ভর্তি। রাস্তায় গাড়ির চাপ আর ফুটপাতের অবস্থার কারণে দুর্ঘটনা লেগেই আছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, একটি কুচক্রী স্বার্থান্বেষী মহল এই অবৈধ দোকানপাট বসিয়েছে, যা এলাকায় শৃঙ্খলা ও সৌন্দর্য নষ্ট করছে। তারা বলছেন, আমাদের ছোট ছোট দোকানদার নয়, যারা প্রশাসনের সাথে যোগসাজশ করে এই দোকান বসাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
দৌলতপুরের বিজ্ঞ মহল এবং স্থানীয়রা সিটি কর্পোরেশনের কাছে জোরালো দাবি তুলেছেন, অবিলম্বে ফুটপাত ও সড়ক সংস্কার করে নিরাপদ ও চলাচলযোগ্য করে তুলতে হবে।