/ খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্যসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা

খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্যসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা

স্টাফ রিপোর্টার: খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রহমান খানসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে যোগ্য প্রার্থীদের ফেল করিয়ে অযোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ দিয়েছেন তারা।


রবিবার (২৭ জুলাই) দুপুরে দুদকের খুলনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন সংস্থাটির উপ-পরিচালক সুমিত্রা সেন।

মামলায় বলা হয়েছে, আসামিরা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়ম করেছেন। তারা নিয়োগের শর্ত ভঙ্গ করে অযোগ্য প্রার্থীদের পাস করিয়ে দেখিয়েছেন এবং ভুয়া নথিপত্র তৈরি করেছেন। কাগজপত্রে জাল স্বাক্ষর ও সুপারিশ যোগ করা হয়েছে। ফলে যোগ্য প্রার্থীরা নিয়োগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে দণ্ডবিধি ৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায়।

মামলায় আসামি করা হয়েছে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রহমান খান, সাবেক রেজিস্ট্রার খন্দকার মাজহারুল আনোয়ার, শাখা কর্মকর্তা মো. জসীম উদ্দীন, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মুরাদ বিল্লাহ, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার টাইপিস্ট আনিসুর রহমান রিন্টু, প্রশাসনিক কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা খায়রুল বাসার রিয়াজ, কম্পিউটার অপারেটর মো. মাসুদ রানা, কম্পিউটার অপারেটর শাহরীন ইসলাম মীম, ল্যাব টেকনিশিয়ান রীনা খাতুন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার টাইপিস্ট এ বি এম আরিফুল ইসলাম তুরান, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার টাইপিস্ট মো. শহিদুল ইসলাম, ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট মো. আসিফ আহমেদ, ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট দিদারুল আলম, ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট মো. হাবিবুর রহমান, অফিস সহায়ক মো. ওয়াহিদুজ্জামান ও অফিস সহায়ক আছিয়া খাতুন।

দুদকের এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে এমন প্রার্থীদের পাস করিয়ে দেখিয়েছেন যারা পরীক্ষায় পাস করতে পারেননি। যোগ্য প্রার্থীদের বাদ দেওয়ার জন্য নথিপত্রে জাল স্বাক্ষর ও ভুয়া সুপারিশ যোগ করা হয়েছে।
ফলে মূলত তৃতীয় থেকে ১৭তম আসামিদের অযোগ্য প্রার্থী হয়েও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

দুদকের উপ-পরিচালক সুমিত্রা সেন বলেন, “নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। আমরা পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহের পর মামলাটি দায়ের করেছি। আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।”

খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই অবকাঠামো ও জনবল সংকটে ছিল। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের এই অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “দক্ষ ও যোগ্য জনবল নিয়োগ না হলে প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”

দুদক জানিয়েছে, মামলার তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রমাণ পাওয়া গেলে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হবে।