বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, “পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতি ছাড়া বাংলাদেশের মানুষ আর কোনো নির্বাচন মেনে নেবে না।” সোমবার (৩০ জুন) খুলনা-৫ আসনের বিভিন্ন স্থানে পথসভা, মতবিনিময় সভা ও গণসংযোগকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “আগামী নির্বাচন শুধু একটি নির্বাচন নয়; এটি একটি বিপ্লব-পরবর্তী জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলনের মহাসুযোগ। সুতরাং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে এবং নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।” তিনি দাবি করেন, “জুলাই সনদ” জুলাই মাসেই ঘোষণা করে প্রশাসনিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে হবে।
গণঅভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পরওয়ার বলেন, “খুনিদের দৃশ্যমান বিচার নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের ভেতরে কোনো ফ্যাসিবাদী থাকতে দেওয়া হবে না।” তিনি বলেন, “২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনে ২ হাজারের বেশি মানুষ নিহত ও ২০ হাজার আহত হয়েছেন। এদের অনেকেই এখনও হাসপাতালে মৃত্যুযন্ত্রণা ভোগ করছেন।”
তিনি অভিযোগ করেন, “ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে গুম, খুন, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি ছিলো স্বাভাবিক ঘটনা। বিরোধিতা করলেই মামলা-হামলার মাধ্যমে হত্যা ও গুম করা হতো। লক্ষ-কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া করেছে।” ইসলামপ্রিয় আলেমদের বিনা অপরাধে বছরের পর বছর কারাগারে আটকে রাখা হয় বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
রোববার সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ডুমুরিয়ার শরাফপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন বাজার, মাদ্রাসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মতবিনিময় ও গণসংযোগে অংশ নেন অধ্যাপক পরওয়ার। তিনি শরাফপুর, ভুলবাড়ীয়া, গজেন্দ্রপুর, চাঁদগড়, বানিয়াখালি ও বসুন্দিয়া বাজারে পথসভা করেন এবং দুই সাবেক চেয়ারম্যানের কবর জিয়ারত করেন।
সভাগুলোর সভাপতিত্ব করেন মাওলানা আব্দুল হাকিম এবং সঞ্চালনায় ছিলেন হারুন অর রশীদ।
অনুষ্ঠানগুলোতে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য মুন্সি মিজানুর রহমান, অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, মাওলানা মুখতার হুসাইন, হাবিবুর রহমান, গাজী মো. সাইফুল্লাহ, আইনজীবী নেতা এডভোকেট আবুল খায়ের, এডভোকেট আবু ইউসুফ মোল্লা, শেখ জাকিরুল ইসলাম, ছাত্রশিবির নেতা হাফেজ বেলাল হুসাইন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ, কওমী মাদরাসার উলামা, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নেতৃবৃন্দ ও অসংখ্য জনসাধারণ।
পরওয়ার বলেন, “আল্লাহর রহমতে আমাদের দলকে নিষিদ্ধ করতে গিয়ে আজ তারাই (আওয়ামী লীগ) নিষিদ্ধ হয়ে গেছে। আমরা আদালতের মাধ্যমে আমাদের নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরে পেয়েছি। জনগণের ভোটে ইসলামপ্রিয়, সৎ ব্যক্তিকে ক্ষমতায় বসাতে হবে, যাতে ন্যায়ভিত্তিক, ইনসাফপূর্ণ কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা যায়—যেমনটি করেছিলেন আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)।”