/ খুলনায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গণসমাবেশ: “৫ আগস্টের পর দেশ গঠনের নতুন সুযোগ”: চরমোনাই পীর

খুলনায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গণসমাবেশ: “৫ আগস্টের পর দেশ গঠনের নতুন সুযোগ”: চরমোনাই পীর

আমির ও চরমোনাই পীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, “৫ আগস্টের পরে দেশের জন্য সুন্দরভাবে গড়ে তোলার এক বিরল সুযোগ তৈরি হয়েছে। এখন যদি আমরা এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে না পারি, তাহলে জনগণকে আবারো হতাশ হতে হবে।”

খুলনার শিববাড়ি মোড়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগর ও জেলা শাখার আয়োজিত গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলনের খুলনা মহানগর সভাপতি মুফতি আমানুল্লাহ এবং সঞ্চালনা করেন নগর সহ-সভাপতি শেখ মো. নাসির উদ্দিন, জেলা সেক্রেটারি হাফেজ আসাদুল্লাহ আল গালিব ও মহানগর সেক্রেটারি মুফতি ইমরান হোসাইন।

চরমোনাই পীর বলেন, “গ্রামের প্রবাদ আছে- ‘যেই লাউ, সেই কদু’। এখন আমরা চাই না দেশ আবার সেই পুরনো অবস্থায় ফিরে যাক। আল্লাহ বলেছেন, যে জাতি নিজেদের পরিবর্তন আনে না, তাদের ভাগ্য আমি পরিবর্তন করি না। আমাদের চাঁদাবাজ, খুনি, টাকা পাচারকারীদের সহযোগী হওয়া বন্ধ করতে হবে। বাংলার জমিনকে চাঁদাবাজ মুক্ত করতে হবে।”

চরমোনাই পীর আরও বলেন, “দ্বীন ও দেশের কল্যাণে আমরা আওয়াজ তুলেছি। ৫ আগস্টের পরে যে ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে, সেটি সুন্দর করার নীতি-আদর্শের নাম ইসলাম। দেশপ্রেমিক সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে আমরা কাজ করব। যারা জনগণের ক্ষতি করেছে, ইতিহাসে তাদের ভূমিকা পরিষ্কার। এখন তাদের প্রতিহত করাই হবে আমাদের লক্ষ্য।”
তিনি আরও বলেন,“বাংলাদেশের মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ। তারা চাঁদাবাজ, খুনি ও টাকা পাচারকারীদের বঙ্গোপসাগরে নিক্ষেপ করবে। স্বচ্ছ রাজনীতি ও সমাজ গঠনে ইসলামী আন্দোলন অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।”

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে আমরা সবাই ভূমিকা রেখেছি। এখন সময় এসেছে জাতির সাধারণ ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিচার নির্বাচনের আগে না হলে জনগণ কোনো নির্বাচন হতে দেবে না।”
তিনি আরও বলেন,“আমরা সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চালুর দাবি করছি। নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা যাচাইয়ের জন্য স্থানীয় নির্বাচন আগে দিতে হবে। প্রশাসনের মধ্যে থাকা ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিদায় করতে হবে।”

মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন,“আমরা এমন একটি নতুন বাংলাদেশ চাই, যেখানে ক্ষুধা-দারিদ্র্য থাকবে না, আইন-আদালতের অপব্যবহার হবে না। আলেম-ওলামাদের মর্যাদা দেওয়া হবে, রাজনৈতিক ভিন্নমত দমনের জন্য কারাগারে বন্দি করা হবে না।”
তিনি অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার চালানো হচ্ছে এবং ইসলামী আন্দোলনকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র চলছে।

গণসমাবেশে বক্তারা নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার ও অন্তর্বর্তীকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানান। তারা বলেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চালু না হলে সুষ্ঠু ভোট সম্ভব নয়।

গণসমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমীর হাফেজ মাওলানা অধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল, মহাসচিব হাফেজ মাওলানা অধ্যক্ষ ইউনুছ আহমাদ, খুলনা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতী মোস্তফা কামাল, শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক মাওলানা শুয়াইব হোসেন এবং খুলনা জেলা সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল্লাহ ইমরান বক্তব্য রাখেন।