#কেডিএ নিরালা ১নং সড়ক ৩ ফুট উঁচু করে মহাসড়কে সংযুক্ত করছে#কেসিসির সড়ক নির্মাণ করছে আগের মাপে নিচু করে # একেক সড়কে ওয়াসার ম্যানহোল একেক রকম # ভবিষ্যতে জলাবদ্ধতার আশংকা
এ এইচ হিমালয় : খুলনার অভিজাত আবাসিক এলাকা হিসেবে পরিচিত নিরালার ভেতরে সড়ক ও ড্রেন পুনর্নির্মাণ করছে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ) এবং খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি)। কেডিএর নির্মাণধীন নিরালা ১নং সড়কটি নির্মাণ হচ্ছে প্রায় ৩ ফুট উচু করে।
এর সঙ্গে সংযুক্ত কেসিসির ২০টি সংযোগ সড়ক ও অন্যান্য সড়ক নির্মাণ হচ্ছে আগের মাপে, অর্থ্যাৎ নিচু করে। ওয়াসার ম্যানহোলগুলোও একেক সড়কে একক রকম। সরকারি সংস্থাগুলোর এমন সমন্বয়হীনতার ফলে ভবিষ্যতে ওই এলাকায় পানি নিষ্কাশন অব্যাহত হওয়াসহ বর্ষায় জলাবদ্ধতার আশংকা দেখা দিয়েছে।
এদিকে আবাসিক এলাকার ভেতর দিয়ে মহাসড়কের সঙ্গে সংযোগ হওয়ায় আবাসিক এলাকার রূপ হারাবে নিরালা। ৪ লেন দৈর্ঘ্যরে সড়কটির নির্মাণ শেষ হলে ওই সড়ক দিয়েই খুলনা-মোংলা মহাসড়কের যানবাহনগুলো শহরে প্রবেশ করবে। ব্যস্ত সড়কে সারাদিনই ভারী যানবাহন চলাচল করবে। সড়কের চাপ অনুযায়ী নিরালা মোড়টি সম্প্রসারণ এবং নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী তৈরি না করলে ওই এলাকায় যানজট বৃদ্ধির আশংকা রয়েছে।
কেডিএ থেকে জানা যায়, ‘সাতক্ষীরা সড়ক ও সিটি বাইপাস সড়কে সংযুক্ত করে সংযোগ সড়কসহ লিংক রোড নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় খুলনায় নতুন তিনটি সড়ক নির্মাণ হচ্ছে। প্রায় ৭১৭ কোটি টাকার এই প্রকল্পের প্রথম সড়কটি নিরালা মোড় থেকে ১ নম্বর সড়ক হয়ে দিঘির পাশ দিয়ে সিটি বাইপাস (রূপসা সেতু অ্যাপ্রোচ) সড়কে গিয়ে মিশবে। প্রায় আড়াই কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটি ৬০ ফুট চওড়া এবং চার লেন হবে। নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৮০ কোটি টাকা। ২০২৪ সালের ২৯ মে সড়ক নির্মাণের জন্য ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। চলতি ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে।
সরেজমিন দেখা গেছে, রূপসা সেতু অ্যাপ্রোচ সড়কের অংশ থেকে সড়কের কাজ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে নিরালা প্রধান সড়কের কাজ হবে। সড়কের দুই পাশে ড্রেন ও ফুটপাত থাকবে। ১নং সড়কের মাঝে ওয়াসার ম্যানহোল তৈরি করা হয়েছে। বর্তমান সড়ক থেকে প্রায় তিন ফুট উচু করে নির্মাণ ম্যানহোল তৈরি করা হয়েছে। কেডিএ সড়কটি তিন ফুট উচু করে নির্মাণ করবে।
এলাকাটি ঘুরে দেখা গেছে, নিরালা আবাসিক এলাকার ভেতরে ২৯টি সড়ক, এবং ১৯টি ছোট সড়ক রয়েছে। ইতোমধ্যে কিছু সড়ক পুনর্নির্মাণ করেছে কেসিসি। কিছু সড়কের কাজ চলছে। সব সড়কই আগের মাপে অথবা কিছুটা উচু হচ্ছে। কিন্তু সেগুলো কোনোভাবেই কেডিএর সড়কের সমান হচ্ছে না। কেডিএর প্রধান সড়কের কাজ শেষ হলে সংযোগ সড়কগুলোতে ওঠানামা যেমন সমস্যা হবে, তেমনটি পানি নিষ্কাশন বাঁধাগ্রস্ত হয়ে বর্ষাকালে জলাবদ্ধতা দেখা দেবে।
নিরালা জনকল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুস সবুর পূর্বঞ্চলকে বলেন, শহরের পাশে কোলাহোলমুক্ত পরিবেশ দেখেই অসংখ্য মানুষ নিরালা আবাসিকে প্লট কিনে বাড়ি তৈরি করেছে। বর্তমানে আবাসিকে প্রায় ১০ হাজার বসবাস করেন। কেডিএর প্রথম দুই মাস্টারপ্লানে আবাসিকের মধ্যে মহাসড়ক ছিল না। গতবছর আমরা পারি রূপসা সেতু বাইপাস থেকে নিরালার ভেতর দিয়ে সংযোগ সড়ক হবে। জাতীয় মহাসড়কের মান বজায় রেখে নির্মাণ করা এই সড়কে ভবিষ্যতে সব ধরনের ভারী যানবাহন চলবে। আবাসিকের ভেতর দিয়ে যদি দিনরাত ভারী যানবাহন চলতে থাকে, তাহলে কি সেটা আবাসিকের পর্যায়ে থাকবে ?
তিনি বলেন, কেডিএর সড়ক ৩ ফুট উচু করায় আশপপাশের বাড়িগুলোর নিচতলা পানিতে তলিয়ে যাবে। আবার কেডিএর সড়ক উচু, কেসিসির সড়ক নিচু-ভবিষ্যতে পানি সরবে কিভাবে? উন্নয়নকাজে সমন¦য়হীনতার ফলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের ভোগান্তিতে পড়বে নিরালার মানুষ।